করোনার কারণে অনেকদিন বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১৫ই নভেম্বর থেকে ট্যুরিস্ট ভিসা দিচ্ছিলো ভারত। কিন্তু সেই ভিসায় শুধুমাত্র বাই এয়ারে ভারত যাওয়া যাচ্ছিলো। বাংলাদেশ থেকে যারা ভারত ভ্রমণ করেন তাদের বেশির ভাগই স্থলপথে ভারত ভ্রমণ করেন। ফলে এ ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারতে যাওয়ার জন্য পর্যটকের সংখ্যা কম ছিলো। অবশেষে ২৮ই মার্চ থেকে স্থলপথে ভিসা দেয়া শুরু করেছে ভারত। তবে ভিসার পোর্ট এর ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো এই আর্টিকেলে।
আগে ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করলে চারটা পোর্ট ডিফল্ট হিসেবে পাওয়া যেতো। অর্থ্যাৎ যে ভিসাই থাকুক না কেন, এ চারভাবে ভারত যাওয়া যেতো। এ চারটি ছিলো বাই এয়ারে ভারতের যেকোন এয়ারপোর্ট, বাই রোডে হরিদাশপুর (বাংলাদেশ অংশে বেনাপোল), বাই রোডে গেদে (বাংলাদেশ অংশে দর্শনা), বাই ট্রেন গেদে (মৈত্রী এক্সপ্রেস)। কিন্তু বর্তমানে ডিফল্ট পোস্ট দিচ্ছে বাই এয়ার (ভারতের যে কোন এয়ারপোর্ট), বাই রোড হরিদাশপুর (বাংলাদেশ অংশে বেনাপোল), বাই রোড আগরতলা (বাংলাদেশ অংশে আখাউড়া) ও বাই ট্রেন গেদে (শুধুমাত্র মৈত্রী এক্সপ্রেসের জন্য প্রযোজ্য এই পোর্ট, আপাতত হেটে পার হওয়া যাবেনা)। এছাড়া নতুন ট্রেনের পোর্ট (বাই ট্রেন জলপাইগুড়ি) নিয়েও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর অর্থ আপনি যে পোর্টেই ভিসার জন্য আবেদন করেন এ লাইনটা লেখা থাকবে: By Air/ Haridashpur/Agartala । এখন যদি আপনি ডাউকির জন্য আবেদন করেন তবে এভাবে আসবে: By Air/ Haridashpur/Agartala/Dwaki অর্থ্যাৎ শেষে আপনার কাঙ্খিত পোর্ট যোগ করে দিবে ডিফল্ট অপশনগুলোর সাথে। যেভাবে লেখা থাকবে সেটার যে কোন পোর্ট দিয়ে ভারতে ঢুকে অন্য যে কোন পোর্ট দিয়ে বের হতে পারবেন। যেমন ডাউকি (তামাবিল) দিয়ে ঢুকে হরিদাশপুর (বেনাপোল) দিয়ে ফেরত আসতে পারবেন। আবার চাইলে বাই রোডে যেয়ে বাই এয়ারে ফেরত আসতে পারবেন।

এখন কিছু গুরুত্বপূর্ণ পোর্ট নিয়ে আলোচনা করি। আপনার ভারতের গন্তব্যের উপর ভিত্তি করে আপনি নিচের পোর্টগুলো পছন্দ করতে পারেন:
কলকাতা হয়ে আসা/যাওয়ার দরকার পড়লে হরিদাশপুর (বেনাপোল) হয়ে যেতে হবে। যেহেতু বাই এয়ার/হরিদাশপুর/আগরতলা আপনাকে দিবেই, সেহেতু আপনি চাইলে অন্য একটি পোর্ট যেমন ডাউকি (তামাবিল) এর জন্য আবেদন করে রাখতে পারেন। একবছর/ছয়মাস মেয়াদী ভিসা পেলে আপনি বছরের অন্য সময় মন চাইলে মেঘালয়েও ঘুরে আসতে পারবেন।
দার্জিলিং/সিকিম এর পরিকল্পণা থাকলে বাই রোড চেংড়াবান্দা (বাংলাদেশ অংশে বুড়িমারী), আপাতত ফুলবাড়ী (বাংলাদেশ অংশে বাংলাবান্দা) দিচ্ছেনা। ভারতের মধ্যে সীমান্ত থেকে শিলিগুড়ির দূরত্ব বাংলাবান্দা থেকে কম হলেও অনেক যানবাহনের সুবিধার জন্য বুড়িমারীকেই বেছে নেন। এছাড়া ভারত-বাংলাদেশের নতুন ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস এর পোর্ট বাই ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি, যেটা জুন ১, ২০২২ থেকে চলবে।

মেঘালয় যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে পছন্দ করতে হবে ডাউকি (বাংলাদেশ অংশে তামাবিল)। এছাড়া ত্রিপুরা যেতে হলে পছন্দ হবে আগরতলা (বাংলাদেশ অংশে আখাউড়া)। তবে আগরতলা পোর্ট যেহেতু ডিফল্ট দেয়া থাকে এটাও আলাদা করে দেয়ার দরকার নেই, চাইলে অন্য একটা পোর্ট নিয়ে রাখতে পারেন।
ট্রেনের পোর্ট ঢাকা কলকাতা ঢাকা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেসের জন্য বাই ট্রেন গেদে (দর্শনা), খুলনা কলকাতা খুলনা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেসের জন্য বাই ট্রেন পেট্রোপোল (বেনাপোল) ও ঢাকা-শিলিগুড়ি-ঢাকা রুটে মিতালি এক্সপ্রেসের জন্য বাই ট্রেন জলপাইগুড়ি। ট্রেন চালু হচ্ছে আগামী ২৯ মে থেকে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস ও ১ জুন থেকে মিতালী এক্সপ্রেস।
এছাড়া আগে থেকে যাদের বাই এয়ারে ভিসা আছে, তাদের ভিসার মেয়াদ থাকলে পোর্ট সংযোজনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এজন্য ভিসা ও পাসপোর্টের ফটোকপি ও এক কপি ছবি নিয়ে ভিসা আবেদন কেন্দ্রে নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে আবেদন করতে পারবেন। আর যারা ভিসা আবেদনের সম্পূর্ণ গাইডলাইন চাচ্ছেন তারা এই আর্টিকেলটা পড়তে পারেন। এর বাইরে কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।
ফিচার ছবি লেখক
দুই বছর পূর্বে আমার পাঁচ বছরের ভিসা নেওয়া আছে, এখন আমি সেই ভিসায় ভারত যেতে পারবো কিনা?
পারবেন