পাকিস্তানের কিংবদন্তী পর্বতারোহী মুহাম্মদ আলী সাপারার মৃতদেহের সন্ধান পেয়েছে বলে দাবী করেছে রোপ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকা নেপাল ও পাকিস্তানের শেরপারা। Madison Mountaineering partners in Pakistan/ Mashabrum Expeditions তাদের ফেইসবুক পেইজে জানিয়েছে আগামীকালের সামিটের জন্য রোপ ফিক্সিং করার সময় তারা মুহাম্মদ আলী সাপারার মৃতদেহ দেখতে পান।

কেটু পর্বতারোহণের সবচেয়ে কঠিন বাঁধা বটলনেকের ৩০০ মিটার নিচে তারা আলী সাপারার মৃতদেহ দেখতে পেয়েছেন। এদিকে ম্যাডিসন এক্সপিডিশনের শেরপারা ক্যাম্প ফোর এর ৪০০ মিটার উপরে আরো একটি মৃতদেহ দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। কালো ও হলুদ পোশাকের এ মৃত পর্বতারোহী হুয়ান পাবলো মোর বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে জন স্নোনিও একই রঙের পোশাকে ছিলেন বলে জানা গেছে।
চলতি বছরের শুরুতেই প্রথমবারের মতো শীতাকালীন সামিট সম্ভবপর করেন নির্মল পুর্জা ও নেপালী শেরপা দল। ৮,৬১১ মিটার উচ্চতার পৃথিবীর ২য় সর্বোচ্চ এ পর্বত শীতকালে এতদিন পর্যন্ত অধরাই ছিলো। এরপর জন স্নোরির নের্তৃত্বাধীন তিনজনের ছোট্ট দল ফেব্রুয়ারীর ৫ তারিখে সর্বশেষ চেষ্টা করেন। পাকিস্তানের বিখ্যাত পর্বতারোহী মুহাম্মদ আলী সাপারা ও তার ছেলে সাজিদ সাপারা ছিলেন এ দলে।

চিলির বিখ্যাত পর্বতারোহী হুয়ান পাবলো মোর একাই ছিলেন শুরুতে। পরবর্তীতে তিনিও যোগ দেন জন স্নোরির দলের সাথে। অক্সিজেন রেগুলেটর সমস্যা করায় ৭,৮০০ মিটার থেকে ফিরে আসেন সাজিদ সাপারা। শেষবারের মতো এই তিন পর্বতারোহীকে তিনি বটলনেকে কাছে (প্রায়া ৮,৪০০ মিটার উচ্চতায়) দেখেন। এরপর থেকেই নিঁখোজ ছিলেন এ তিন বিখ্যাত পর্বতারোহী।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সর্বাধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে অভিযান চালিয়েও কোন সন্ধান পাননি এ তিনজনের। অবশেষে অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করে মৃত ঘোষণা করা হয় এ তিনজনকে। এবছর তাদের খোঁজে আবার সন্ধান চালানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন সাজিদ সাপারা। আরো দুজন পাকিস্তানী পর্বতারোহীকে নিয়ে এ মুহুর্তে তারা ক্যাম্প ২ এ অবস্থান করেছেন। এর মধ্যেই পর্বতে পাওয়া দুটি মৃতদেহ সম্পর্কে তাদের অভিহিত করা হয়েছে।
আপডেট: জন স্নোরির মৃতদেহও পাওয়া গেছে। আলী সাপারার মৃতদেহ যেখানে পাওয়া যায় তার ১০০ মিটার সামনে জন স্নোরির মৃতদেহও পাওয়া গেছে। সাজিদ সাপারা ক্যাম্প ফোর এ পৌছে গেছেন, আগামীকাল এ মৃতদেহগুলো উদ্ধারে তারা কাজ শুরু করবেন। ৮,০০০ মিটারের বেশি উচ্চতা থেকে মৃতদেহ বয়ে নিয়ে আসাও অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার।
এ কাজে সংযুক্ত হবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার। জন স্নোরির মৃতদেহ দেশে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তার স্ত্রী লিনা। এছাড়া হুয়ান পাবলোর মৃতদেহও চিলিতে ফেরত নিয়ে যেতে চান তার মা ও বোন। পর্বত থেকে মৃতদেহগুলো নামিয়ে আনা সম্ভব হলে তাদের ইচ্ছানুসারে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে জন স্নোরি ও হুয়ান পাবলোর মৃতদেহ।
তথ্যসূত্র: কেটু ক্লাইম্বার্স