গত ২৬ জুন ২০২২ ভোর ৬ টায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। যানবাহন চলাচলের শুরুর দিনই পদ্মা সেতু দেখতে ভিড় জমায় সব ধরণের যানবাহন। সেতু বিভাগ তার আগে প্রজ্ঞাপণ জারি করে পদ্মা সেতুতে কোন ধরণের যানবাহন দাঁড়ানোর ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু আবেগ প্রবণ জনতা প্রথম দিন সে নিয়ম ভেংগে সেতুর সার্ভিস লেইনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা, ভিডিও করা টিকটক করা শুরু করে।
শুধু বাইক বা গাড়ি নয়, এমনকি বাস-ট্রাকও পদ্মা সেতুতে দাঁড়াতে শুরু করে। এর মধ্যে প্রথম দিন রাতেই ফেইসবুক লাইভে থাকা অবস্থায় দুজন বাইকার মো: আলমগীর হোসেন ও মো: ফজলু সেতুর ২৭ ও ২৮ নাম্বার পিলারের মাঝে আছড়ে পড়ে মারাত্মক আহত হয়। পরবর্তীতে দুজনকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানেই রাত দশটার দিকে তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৭ জুন ২০২২ সকাল ৬ টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেতুতে বাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়।

সব ধরণের যানবাহন সেতুতে দাঁড়ানো ও টিকটক করলেও দোষারোপ করা হয় বাইকারদের। এর মধ্যে বায়েজীদ নামের একজন টিকটকার সেতুর নাট হাত দিয়ে খোলার দৃশ্য ভিডিও করে মুহূর্তেই সে ভিডিও ভাইরাল হয়। ছড়ানো হয় বায়েজীদ বাইকের টুলবক্স দিয়ে খুলেছে। অথচ বায়েজীদ জানিয়েছে সে তার পরিবারের বেশ কয়েকজনকে নিয়ে মাইক্রোবাসে পদ্মা সেতুতে বেড়াতে যায়। আর সেতুর নাট খুলতে ব্যবহার করে গাড়ির টুলবক্স।
দুই বাইকারের লাইভ ভিডিওতে দেখা যায় সেতুর উপরে উঠে তারা ১০৫ কিলোমিটার গতিতে চালায়, পরবর্তীতে গতি কমিয়ে ৭০ কিমিতে আসলেও হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আছড়ে পড়ে। যার মোবাইল থেকে ভিডিওটা হচ্ছিলো সে দিকে কোন গাড়ি/ অন্য কিছুর সাথে সংঘর্ষ না হওয়ায় হঠাৎ আছড়ে পড়ার কারণ বোঝা যাচ্ছিলনা। কিন্ত আজ ভাইরাল হওয়া অন্য ভিডিওতে নিহত দুই বাইকারের ঠিক পেছনের বাইক থেকে ভিডিও করায় এ দূর্ঘটনার কারণ অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে।

ভিডওতে দেখা যায় সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস সেতুর সার্ভিস লেইনে দাঁড়িয়ে ছিলো। হঠাৎ করে সেটা চলতে শুরু করার সময় অন্য একটি মোটরসাইকেল (প্লাটিনা) কে ধাক্কা দেয়। এসময় মোটরসাইকেল আরোহীরা রাস্তায় পড়ে গেলে আলমগীরের মোটরসাইকেল তাদেরকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সেতুর রাস্তায় আছড়ে পড়ে। আলমগীর বা ফজলু কেউই হেলমেট না পড়াতে তারা দুজনই গুরুতর আহত হয়।

এরকম একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপণায় হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলের উঠে পড়ার দায়ভার সেতু কর্তৃপক্ষ ও সেতুর নিরাপত্তায় নিয়োজিত লোকবলও এড়াতে পারেনা। ভিডিওর লিংক এখানে দিলাম, আপনারা ভিডিওটি ভালো করে দেখে মন্তব্য করবেন এখানে কার দোষ বেশি ছিলো।
ছবি: মাহমুদ ফারুক