ভারতের অনেক অঞ্চলেই বয়ে যাচ্ছে তাপ প্রবাহ। আর সেই তাপ থেকে বাঁচেত হাজারো পর্যটক ছুটে যাচ্ছেন হিল স্টেশনগুলোতো। কাশ্মীর-জম্মু, লাদাখ-লেহ, উত্তরখান্দ যেখানেই এখন তাপমাত্রা কম, সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন হাজারো পর্যটক। যারা বুকিং না দিয়েই এসব জায়গায় যাচ্ছেন, তাদের জন্য দু:সংবাদ, পর্যটকের জোয়ারে পাওয়া যাচ্ছেনা পরিবহন। আর এ অবস্থা চলবে অন্তত জুলাইয়ের মধ্যভাগ পর্যন্ত।
গত দুবছর কোভিডের প্রকোপের কারণে অনেকেই ঠিক মতো বের হতে পারেননি। তার উপর ছিলো কোভিড সংক্রান্ত নানাবিধ নিয়ম-কানুন। এ বছর সেগুলো উঠে গেছে, আর তাই পর্যটকরা ছুটে বেড়াচ্ছেন সবখানে। এছাড়া বিদেশ ভ্রমণ এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি, তাই ভারতের মধ্যেই বেড়াচ্ছেন বেশিরভাগ ভারতীয় পর্যটক। অপরদিকে পর্যটক ভিসা দেয়া শুরু করার পর থেকে বিদেশী পর্যটকও আসছেন।

গতবছর জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত খোলা ছিলো লাদাখ। আর তাতে পর্যটক এসেছিলেন প্রায় তিন লাখ। আর এবছর এ সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ফলে আবাসন সংকট দেখা না দিলেও সব ধরণের পরিবহনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বারো সিটের কোস্টার, সাত সিটের ইনোভা বা জাইলো গাড়ী সহ সব গাড়িই পুরো জুন মাস জুড়েই অগ্রীম ভাড়া হয়ে আছে। ফলে এখন কেউ লাদাখ গেলে গাড়ী পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আগে থেকে যাদের বুকিং দেয়া ছিলো শুধু তারাই যেতে পারবেন।
পরিবহন সংকটের কথা জানিয়ে অল লাদাখ ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন একটি সতর্কবার্তা জারি করেছেন। এখন কেউ আসলে তাদেরকে নিজেদের গাড়ি ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করেছেন তারা। এর আগে ব্যক্তিগত পরিবহন নিয়ে লাদাখ যাওয়ার জন্য হাইওয়ে টু হাইওয়ে নীতি মেনে চলা হতো, যাতে পর্যটকরা নিজেদের পরিবহন নিয়ে এসে লাদাখের মধ্যে ঘোরাঘুরি করার জন্য স্থানীয় পরিবহন ব্যবহার করতো। পরিবহন সংকটের কারণে আপাতত এ নীতি থেকে সরে এসেছে তারা।

এখন ব্যক্তিগত পরিবহন নিয়ে লাদাখ ভ্রমণ করা যাবে, তবে গাড়িতে গাড়ির মালিক থাকতে হবে। যেমন এক গাড়িতে যদি চারজন আসে, সেখানে গাড়ির মালিকও থাকেন তাহলে কোন বাড়তি অনুমোদন ছাড়াই তারা লাদাখ ভ্রমণ করতে পারবেন। এছাড়া কেউ যদি ভাড়া গাড়িতে আসেন তাহলে স্থানীয় এসোসিয়েশন থেকে ৫০০-১০০০ টাকায় অনুমতি নিয়ে লাদাখ ভ্রমণ করতে পারবেন।

এদিকে পর্যটকদের ভিড় হিমালয়ের মতো প্রতিবেশে পরিবেশের ক্ষতিসাধন করবে বলে আশংকা করছেন পরিবেশবাদীরা। ট্রাফিক জ্যাম, বায়ু দূষণ ও প্লাস্টিক দূষণ পর্বতের পরিবেশে উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন তারা। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টন প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করা হয় লাদাখ-লেহ থেকে। শুধু পর্যটকরাই নন, স্থানীয় হোটেল ও হোমস্টেগুলোও পরিবেশ রক্ষার নিয়মকানুন মানছেননা।
ফিচার ছবি pixbay